শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

জেনে নিন উইন্ডোজের Log off, Lock, Shutdown, Restart, Sleep/Standby, Hibernate, Hybrid Sleep কমান্ড গুলোর আসলে কাজ কি

“বিসমিল্লাহহির রাহমানির রাহিম”

CMD_2_F

আসসালামু আলাইকুম।

আশাকরি সবাই ভালই আছেন। সবাইকে আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের পোস্ট।
আমরা প্রতিদিন কম্পিউটারে কত কাজই না করি। কিন্তু প্রতিবারই কম্পিউটার চালু করার সময় আমাদের Start এবং বন্ধ করার সময় Shutdown করতে হয়। তাছাড়া বিভিন্ন সময় Log off, Lock, Restart, Sleep/Standby, Hibernate, Hybrid Sleep এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই কমান্ড গুলো বলতে আসলে কি বোঝাই আর এদের কাজই বা কি জানলে মন্দ হয় না।
তাই আপনাদের আজ খুব অল্প কথাই Log off, Lock, Shutdown, Restart, Sleep/Standby, Hibernate, Hybrid Sleep সম্পর্কে হালকা ধারনা দিতে চাই। প্রথমেই,

Log off

আপনি যখন কম্পিউটার চালু করেন তখন আপনার উইন্ডোজের যদি একটা User Account থাকে তাহলে অটোমেটিক সেই এ্যাকাউন্টে Log In হয়ে যায় ফলে আপনি আপনার উইন্ডোজের এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। আপনি কাজ করতে করতে কিছুক্ষণের জন্য বিরতি দিতে চাইলে আপনার এ্যাকাউন্টটি Log off করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে কম্পিউটার চালু থাকবে কিন্তু কোনো কাজ করা যাবে না। কম্পিউটার চালু থাকায় বিদ্যুৎ খরচ হয় তাই এই উদ্দেশ্যে সাধারনত কেউ লগ অফ করে না। সাধারনত যে সব কম্পিউটারে একাধিক ইউজার অর্থাৎ একাধিক User Account থাকে তারা লগ অফ কমান্ড ব্যবহার করে থাকেন এক এ্যাকাউন্ট লগ অফ করে অন্য এ্যাকাউন্টে লগ ইন করার জন্য। তবে আপনাকে লগ অফ করার আগে সব কাজ সেভ করতে হবে তা না হলে আনসেভড ডাটা ফেরত পাবেন না।
বর্তমান যুগে সবাই ফেসবুক ব্যবহার করেন তাই একটা উদাহরন দিলে সবাই আর ভাল করে বুঝতে পারবেন। ফেসবুকের লগ ইন এবং লগ আউট হল যথাক্রমে উইন্ডোজের লগ ইন এবং লফ অফ। আপনার যদি একটা ব্রাওজার এবং ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে আপনার লগ অফ এর প্রয়োজন হবে না। তাই একটি কম্পিউটারে একটি মাত্র ইউজার থাকলে Log off এর প্রয়োজন পরে না।

Lock

এটা মূলত ব্যবহার করা হয় Privacy ensure করার জন্য। আপনি Lock এর কমান্ড দিলে তাৎক্ষনিকভাবে আপনার কম্পিউটার লক হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আনলক করার জন্য আপনার ইউজার এ্যাকাউন্টে যদি Password সেট করা থাকে তাহলে পাসওয়ার্ড দিয়ে আনলক করতে হবে।
ধরুন আপনি কোনো পার্সোনাল কাজ করছেন কম্পিউটারে এমন সময় ৫ মিনিটের জন্য আপনাকে কম্পিউটার থেকে উঠতে হবে এমন সময় আপনার কম্পিউটার এভাবে ফেলে রেখে গেলে কেউ আপনার পার্সোনাল কাজ দেখে ফেলতে পারে, আবার সাটডাউন করলে আবার ঝামেলা। তাই এমন সময় আপনি আপনার কম্পিউটার Lock করলে কাজ শেষে এসে আনলক করে আপনার কাজ যেভাবে রেখে গিয়েসিলেন ঠিক সেভাবেই পাবেন। মধ্য দিয়ে লক করার জন্য আপনার প্রাইভেসি রক্ষা হল সেই সাথে সাটডাউন এর ঝামেলা থেকে মুক্তি পেলেন।

Shutdown

Shutdown কমান্ড এর মাধ্যমে আপনার কম্পিউটার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে এবং আর কোনো বিদ্যুৎ গ্রহন করবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে সাটডাউন করার আগে অবশ্যই সব ডাটা সেভ করতে হবে অন্যথায় আপনি আপনার আনসেভড ডাটা হারাবেন।
সাধারনত ব্যবহারকারীরা সব কাজ শেষে দীর্ঘ বিরতির ক্ষেত্রে সাটডাউন কমান্ড দিয়ে থাকেন।

Restart

Restart কমান্ড এর মাধ্যমে আপনার কম্পিউটার নতুন করে চালু হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে কম্পিউটার রিস্টার্ট করার আগে অবশ্যই সকল কাজ সেভ করে নিতে হবে। তা না হলে আনসেভড ডাটা ফেরত পাবেন না।

Sleep/Standby

অনেকের মতে Sleep এবং Standby হল একই জিনিস। স্লিপ মুডে কম্পিউটার সামান্য পরিমান বিদ্যুৎ গ্রহন করে এবং আপনার আনসেভড ডাটা RAM এ সংরক্ষণ করে রাখে। এ অবস্থায় আপনার মাউস অথবা কীবোর্ড এর যে কোনো যায়গায় চাপ লাগলেই সাথে সাথে আপনার কম্পিউটার চালু হয়ে যাবে এবং আপনি আপনার কম্পিউটার কে পূর্বের অবস্থায় ফিরে পাবেন।
সাধারনত অল্প সময়ের বিরতির ক্ষেত্রে স্লিপ মুড ব্যবহার করা হয়, কারন সাটডাউন করে আবার স্টার্ট করা বেশ সময় সাপেক্ষ ও ঝামেলার । তবে আপনি স্লিপ মুডে থাকা অবস্থায় বিদ্যুৎ চলে গেলে আপনি আর আপনার আনসেভড ডাটা ফেরত পাবেন না। তাই যাদের ডেস্কটপে UPS নেই তাদের স্লিপ মোড ব্যবহার করলে আগে সব কাজ সেভ করে নিতে হবে। আর যাদের UPS আছে অথবা Laptop আছে তারা Sleep ব্যবহার করে সময় এবং বিদ্যুৎ/ব্যাটারী সাশ্রয় করতে পারবেন। এই পদ্ধতি খুব দ্রুত কাজ করে। সল্প বিরতির জন্য সাটডাউন করার কোনো মানেই হয় না।

Hibernate

Hibernate মোডে আপনি আপনার কম্পিউটারকে যেই অবস্থায় রেখে যাবেন ঠিক সেই অবস্থাতেই ফিরে পাবেন। আপনি যখন Hibernate মোডে প্রবেশ করবেন তখন আপনার সকল আনসেভড ডাটা আপনার Hard Disk এ সংরক্ষিত হবে ফলে আপনার কোনো ডাটা হারানোর ভয় থাকল না। এতে করে আপনার কম্পিউটার সাটডাউন এর মত হয়ে যাবে। অর্থাৎ কম্পিউটার আর কোনো বিদ্যুৎ গ্রহন করবে না। এতে করে আপনার বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। বিদ্যুৎ গ্রহন না করায় বিদ্যুৎ চলে গেলে ডাটা হারানোর কোন ভয়ই থাকল না। আপনি যখন Resume করবেন তখন কম্পিউটারকে আগের অবস্থায় ফেরত পাবেন।
ধরুন আপনি কম্পিউটার এ অনেক কাজ করছেন এক্ষেত্রে আপনি যদি বেশ কিছু সময়ের জন্য অন্য কোনো কাজে যান সেক্ষেত্রে ফিরে এসে আবার সব প্রোগ্রাম গুলো চালু করা অনেক কষ্টের। তাই ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপে Hibernate মোড ব্যবহার করে সময় ও বিদ্যুৎ/ব্যাটারী সাশ্রয় করা যায় সেই সাথে ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই পদ্ধতি স্লিপ মোডের চেয়ে কিছুটা ধীরগতির।

Hybrid Sleep

Hybrid Sleep হল Sleep এবং Hibernate মোডের সংমিশ্রণ। এক্ষেত্রে আপনার আনসেভড ডাটা RAM এবং Hard Disk উভয় জায়গাতেই Save হবে। ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলে কোনো সমস্যা নেই। পরবর্তীতে কম্পিউটার তা Restore করতে পারবে। তাই Hybrid Sleep মোডে আপনি খুব সল্প সময়ে আপনার কম্পিউটার Resume করতে পারবেন এবং আপনার কম্পিউটারকে আগের অবস্থায় ফেরত পাবেন। এক্ষেত্রে কম্পিউটার খুব সল্প পরিমান বিদ্যুৎ গ্রহন করে। Hybrid Sleep অন থাকলে Sleep মোডে প্রবেশ করলে কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে Hybrid Sleep এ প্রবেশ করে।


আমি পোস্টটা তে খুব সহজ করে সাধারন ভাষায় বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারনা দেবার চেষ্টা করেছি। মানুষ মাত্রই ভুল। কোনো ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে সমাধান করে দেবার জন্য অনুরধ করছি। আর পরিশেষে বলতে চাই পোস্টটি কেমন হল কমেন্টের মাধ্যমে জানালে ভাল হয়।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন